সর্বশেষ

6/recent/ticker-posts

গণ-উপদ্রব বলতে কি বুঝেন? দণ্ডবিধির সংশ্লিষ্ট ধারাসমূহের আওতায় যত প্রকারের গণ-উপদ্রবের বিবরণ দেয়া হয়েছে তা সবিস্তারে আলোচনা করুন। গণ-উপদ্রব অপসারণে দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেট-এর ভূমিকা লিখুন।

গণ-উপদ্রব বলতে কি বুঝেন? দণ্ডবিধির সংশ্লিষ্ট ধারাসমূহের আওতায় যত প্রকারের গণ-উপদ্রবের বিবরণ দেয়া হয়েছে তা সবিস্তারে আলোচনা করুন। গণ-উপদ্রব অপসারণে দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেট-এর ভূমিকা লিখুন।


 গণ-উপদ্রব বলতে কি বুঝেন? দণ্ডবিধির সংশ্লিষ্ট ধারাসমূহের আওতায় যত প্রকারের গণ-উপদ্রবের বিবরণ দেয়া হয়েছে তা সবিস্তারে আলোচনা করুন। গণ-উপদ্রব অপসারণে দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেট-এর ভূমিকা লিখুন। 


গণ-উপদ্রব


দণ্ডবিধি, ১৮৬০ এর ধারা-২৬৮ অনুযায়ী, যে ব্যক্তি, এমন কোন কার্য করে বা এমন কোন বেআইনী বিচ্যুতির অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়, যাহা নিকটবর্তী অধিবাসী বসবাসকারী সম্পত্তির 'ব্যবহারকারী বা জনসাধারণ বা সাধারণভাবে জনগণের কোন সাধারণ ক্ষতি, বিপদাশংকা বা বিরক্তি উৎপাদন হয়, বা যাহা অনিবার্যভাবে যে জনগণ কোন অধিকার ব্যবহার করিবার সুযোগ লাভ করিতে পারে, সেই জনগণের ক্ষতিসাধন, ব্যাঘাত, বিপদাশংকা বা বিরক্তি সৃষ্টি করিবে, সেই ব্যক্তি গণ-উপদ্রব্যের অপরাধে দোষী বলিয়া সাব্যস্ত হইবে।


গণ উপদ্রবের প্রকার


১) যেক্ষেত্রে কোন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, বা অন্য যে কোন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক পুলিশ রিপোর্ট বা অন্য কোনরূপ সংবাদ পাইয়া এবং প্রয়োজন অনুসারে সাক্ষ্য (যদি থাকে) গ্রহণপূর্বক মনে করেন যে, জনসাধারণ আইন সঙ্গতভাবে ব্যবহার করিতেছে বা করিতে পারে এইরূপ কোন পথ, নদী বা খাল থেকে বা সর্বসাধারণের ব্যবহার্য কোন স্থান হইতে কোন বেআইনী প্রতিবন্ধকতা বা উপদ্রব অপসারণ করা উচিত;


কোন ব্যবসা বা পেশা চালানো বা কোন মালপত্র বা পণ্যদ্রব্য রাখা স্থানীয় বাসিন্দাদের স্বাস্থ্য বা শারীরিক আরামের পক্ষে ক্ষতিকর এবং সেই কারণে উক্ত ব্যবসা বা পেশা নিষিদ্ধ বা নিয়ন্ত্রিত করা উচিত এবং সেই কারণে উক্ত ব্যবসা বা পেশা নিষিদ্ধ বা নিয়ন্ত্রিত হওয়া উচিত বা উক্ত মাল বা পণ্যদ্রব্য অপসারণ করা উচিত বা তা রাখা নিয়ন্ত্রণ করা উচিত; বা


কোন অট্টালিকা বা দালান নির্মাণ, বা কোন পদার্থের বিলিবন্দেজ, যা সম্ভবতঃ প্রচন্ড অগ্নিকান্ড বা বিষ্ফোরণের উপলক্ষ হইতে পারে, তা নিবারণ বা বন্ধ করা উচিত; বা


কোন অট্টালিকা বা দালান, তাঁবু বা কাঠামো, বা কোন গাছ এইরূপ অবস্থায় আছে যে তাহা সম্ভবত ভেঙ্গে পড়িবে এবং তার মাধ্যমে পার্শ্ববর্তী এলাকায় বসবাসকারী বা ব্যবসায় চালনাকারী বা সেখান দিয়ে যাতায়াতকারী ব্যক্তিদের সম্ভবতঃ ক্ষতি ঘটাইবে এবং সে কারণে উক্ত অট্টালিকা বা দালান, তাঁবু বা কাঠামো অপসারণ, মেরামত বা ঠেকা দেওয়া, অথবা উক্ত গাছকে অপসারণ করা বা ঠেকা দেওয়া উচিত, বা


সর্বসাধারণের রাস্তা বা স্থান সংলগ্ন কোন পুকুর, কুপ বা খনিজ গর্ত এমনভাবে ঘিরিয়া দেওয়া উচিত যাহাতে তা জনসাধারণের বিপদ সৃষ্টি নিবারণ করে, বা


কোন বিপজ্জনক জন্তু ধ্বংস, আটক করা বা অন্য কোনভাবে তাহা থেকে নিস্তার পাওয়া উচিত,


তখন উক্ত ম্যাজিস্ট্রেট, এইরূপ প্রতিবন্ধকতা বা উপদ্রব সৃষ্টিকারী এইরূপ ব্যবসা বা পেশা চালনাকারী, অথবা এইরূপ কোন মাল বা পণ্যদ্রব্য রক্ষাকারী, অথবা এইরূপ অট্টালিকা বা দালান, তাঁবু, কাঠামো, পদার্থ, পুকুর, কুপ বা খনিজ গর্তের স্বত্বাধিকারী, দখলিকার বা নিয়ন্ত্রণকারী, অথবা এইরূপ জন্তু বা গাছের স্বত্বাধিকারী বা দখলিকার ব্যক্তিকে একটি শর্তাধীন আদেশ দিয়ে আদেশে নির্দিষ্ট করিয়া দেওয়া সময়ের মধ্যে করিবার জন্য নিম্নলিখিত ফরমাশ করিতে পারেন,


এইরূপ প্রতিবন্ধকতা বা উপদ্রব অপসারণ করিতে; বা


এইরূপ ব্যবসা বা পেশা চালানো থেকে বিরত হইতে, বা যেইরূপভাবে নির্দেশিত হইতে পারে সেইরূপ ভাবে তা অপসারণ বা নিয়ন্ত্রণ করিতে; বা


এইরূপ মাল বা পণ্যদ্রব্য অপসারণ করিতে, বা যেইরূপভাবে নির্দেশিত হইতে পারে সেইরূপে উক্ত মাল বা পণ্যদ্রব্য রাখা নিয়ন্ত্রণ করিতে; বা


এইরূপ অট্টালিকা বা দালানের নির্মাণ নিবারণ বা বন্ধ করিতে, বা উক্ত পদার্থের বিলিবন্দেজ পরিবর্তন করিতে; বা


উক্ত অট্টালিকা বা দালান, তাঁবু বা কাঠামো অপসারণ, মেরামত করিতে বা তাতে ঠেকা দিতে, বা উক্ত গাছ অপসারণ করিতে বা তাহাতে ঠেকা দিতে; বা


অথবা উক্ত পুষ্করিণি, কুপ বা খন্দকের গর্ত ঘেরা দিতে; বা


আদেশে বিধির মত উক্ত বিপজ্জনক প্রাণী বিনষ্ট বা আটক করতে বা তা থেকে নিস্তার পাইতে;


সে যদি সেইরূপ আপত্তি জানায়, তবে আদেশে নির্দিষ্ট করিয়া দেওয়া সময় এবং স্থানে তাঁহার নিজের কাছে বা কোন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে হাজির হইতে এবং অতঃপর উল্লেখিত পদ্ধতিতে আদেশটি বাতিল বা সংশোধন করাইয়া নিতে পারিবেন।


২) অত্র ধারার আওতায় ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক যথাযথভাবে দেওয়া কোন আদেশের বিষয়ে, কোন দেওয়ানী আদালতে প্রশ্ন উত্থাপন করা যাইবে না।


আদেশ জারি বা প্রজ্ঞাপন। ১) আদেশটি, যদি কৃতসাধ্য হয় তবে, যাহার বিরুদ্ধে তা দেওয়া হইয়াছে সেই ব্যক্তিকে সমন ধরানোর জন্য অত্র বিধিতে বিধৃত পদ্ধতিতে ধরাইতে হইবে।


২) যদি আদেশটি উক্তরূপে ধরাইতে না পারা যায়, তবে সরকার কর্তৃক প্রণীত বিধি দ্বারা সেইরূপে আদেশটি সর্বসাধারণ্যে প্রকাশ করিয়া ঘোষণার মাধ্যমে বিজ্ঞাপিত করিতে হইবে, এবং ঐ আদেশের একটি নকল সেইরূপ স্থানে বা স্থানগুলিতে আটকাইয়া দিতে হইবে যাহা উক্ত ব্যক্তিকে সংবাদটি পৌছাইয়া দেওয়ার জন্য সর্বাপেক্ষা উপযুক্ত হইতে পারে।


গণ-উপদ্রব অপসারণে দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেট-এর ভূমিকা


জনসাধারণের অধিকারের অস্তিত্ব অস্বীকারের ক্ষেত্রে পদ্ধতি

১) যেইক্ষেত্রে কোন পথ, নদী, খাল বা স্থান ব্যবহার সম্পর্কিত বিষয়ে জনসাধারণের প্রতি বিঘ্ন, উপদ্রব বা বিপদ নিস্তারের লক্ষ্যে ধারা-১৩৩ এর আওতায় আদেশ দান করা হয়, সেইক্ষেত্রে যাহার বিরুদ্ধে আদেশ দেওয়া হইয়াছে, তিনি উপস্থিত হইলে ম্যাজিস্ট্রেট তাহাকে জিজ্ঞাসাবাদ করিবেন যে তিনি উক্ত পথ, নদী, খাল বা স্থানে জনসাধারণের অধিকারের অস্তিত্ব অস্বীকার করেন কিনা এবং তিনি অস্বীকার করিলে ধারা-১৩৭ এর আওতায় ব্যবস্থা গ্রহণ করিবার আগে ম্যাজিস্ট্রেট অত্র বিষয়ে অনুসন্ধান করিবেন।


২) উক্তরূপ অনুসন্ধানরত অবস্থায় যদি ম্যাজিস্ট্রেট যদি দেখিতে পান যে, উক্ত অস্বীকৃতির সমর্থনে নির্ভরযোগ্য প্রমাণ রহিয়াছে, তবে উক্ত অধিকারের অস্তিত্বের বিষয়টি যথাযোগ্য দেওয়ানী আদালতকর্তৃক নির্ধারিত না হওয়া পর্যন্ত তিনি কার্যক্রম গ্রহণ স্থগিত রাখিবেন আর কোন প্রকার সাক্ষ্য প্রমাণ না থাকিলে তিনি ধারা-১৩৭ এ বর্ণিত পদ্ধতি মোতাবেক আগাইয়া যাইবেন।


৩) ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক উপ-ধারা-১ এর আওতায় জিজ্ঞাসিত হইয়া যে ব্যক্তি উক্ত উপ-পারায় উল্লেখিত প্রকৃতির জনসাধারণের অধিকারের অস্তিত্ব অস্বীকার করিতে অক্ষম হইয়াছে বা যে উক্তরূপে অস্বীকারপূর্বক উহার সমর্থনে নির্ভরযোগ্য সাক্ষ্য প্রমাণ প্রদানে অক্ষম হইয়াছে, পরবর্তী পর্যায় তাহাকে উক্তরূপ অস্বীকৃতি জ্ঞাপনের অনুমতি দেওয়া হইবে।


অনুসন্ধান হওয়া পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা


১) ধারা-১৩৩ এর আওতায় আদেশ দিবেন এমন একজন ম্যাজিস্ট্রেট যদি এইরূপ বিবেচনা করেন যে, সর্বসাধারণের আসন্ন বিপদ বা মারাত্মক ধরণের ক্ষতি নিবারণ করিতে অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত, তবে যে ব্যক্তির বিরুদ্ধে আদেশটি দেওয়া হইয়াছিল সেই ব্যক্তির প্রতি এইরূপ একটি নিষেধাজ্ঞা জারি করিতে পারেন যেইরূপ নিষেধাজ্ঞা ঐ বিষয়টির সিদ্ধান্ত হওয়া পর্যন্ত উক্ত বিপদ বা ক্ষতি দূর করিতে বা নিবারণ করিতে প্রয়োজন।


২) উক্ত ব্যক্তি অবিলম্বে ঐ নিষেধাজ্ঞা খেলাপ করিলে, ম্যাজিস্ট্রেট উক্ত বিপদ দূর করিতে বা উক্ত ক্ষতি নিবারণ করিতে যেইরূপ পন্থা যথাযথ মনে করেন সেইরূপ পন্থা নিজে প্রয়োগ করিতে পারেন, বা প্রয়োগ করাইতে পারেন।


৩) অত্র ধারার আওতায় ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক সদ্‌ভাবে করা কোন কিছুর জন্য মামলা হইবে না।


সার্বজনিক উপদ্রবের পুনরাবৃত্তি বা চালিয়ে যাওয়াকে ম্যাজিস্ট্রেট নিষিদ্ধ করিতে পারেন


জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বা জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছ থেকে জ়ামতাপ্রাপ্ত অন্য যে কোন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের কাছ থেকে প্রাপ্ত ক্ষমতায় ক্ষমতাবান অন্য কোন ম্যাজিস্ট্রেট কোন ব্যক্তির প্রতি দণ্ডবিধি (১৮৬০ সনের ৪৫নং আইন) বা কোন বিশেষ বা স্থানীয় আইনে বর্ণিত সার্বজনিক উপদ্রব পুনরায় না করিতে বা তা চালাইয়া না যাইতে যে কোন ব্য্যক্তিকে আদেশ দিতে পারেন।


Post a Comment

0 Comments