মানহানি[Defamation]
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৯ নম্বর অনুচ্ছেদে মানহানির (Defamation) মতো অপরাধ না করার শর্তে নাগরিকদের জন্য ‘চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা এবং বাক্-স্বাধীনতা’ নিশ্চিত করা হয়েছে। অন্যদিকে কমন ল লিগ্যাল সিস্টেমেও এমন অপরাধ কথা বলা হয়েছে যা মূলত পরনিন্দা(Libel) ও অপবাদ (Slander) দ্বারা গঠিত হয়। সাধারণত লিখিত, মুদ্রিত, চিত্রিত বা সম্প্রচারিত মানহানিকর বক্তব্য প্রকাশের মাধ্যমে পরনিন্দার(Libel) কাজটি স্থায়ীভাবে হয়ে থাকে যার প্রমাণ থাকে। অন্যদিকে অপবাদ (Slander) সাধারণত মৌখিক কথোপকথন, বক্তৃতার মাধ্যমে কাজটি হয়ে থাকে।
মানহানি হতে হলে কোন নিন্দা বা দোষারোপ অন্য ব্যক্তির নিকট প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রকাশিত হতে হবে। অর্থাৎ কেউ কারো বিরুদ্ধে মানহানিকর কোনো মন্তব্য বা বক্তব্য প্রদান করলেই কিংবা লেখার মাধ্যমে কোথাও তা প্রকাশ করলেই কিন্তু তা মানহানি বলে গণ্য হবে না। মানহানির অপরাধ হতে হলে অবশ্যই তা অন্য কারো নিকট প্রকাশিত বা প্রচারিত বা পৌঁছতে হবে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, কেউ কাউকে গালি দিলে সেই গালি যদি অন্য কেউ না শুনে কিংবা কেউ কারো ফেসবুক বা ম্যাসেঞ্জার ইনবক্সে বাজে প্রস্তাব করলে, যদি তা অন্য কেউ না দেখে বা শুনে তাহলে তা মানহানি বলে গণ্য হবে না; সেটা হয়তো অন্য কোনো অপরাধের আওতাভুক্ত হতে পারে।
মানহানি অপরাধ ফৌজদারি ও দেওয়ানি উভয় প্রকারেরই হতে পারে। ফৌজদারি আদালতে মানহানি মামলা হওয়ার পর অভিযুক্ত ব্যক্তি যদি দোষী প্রমাণিত হয় তাহলে, সে কারাদণ্ড কিংবা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হন। পক্ষান্তরে, দেওয়ানি আদালতে মামলা হলে এবং সেই মামলায় বাদি জয়ী হলে বিবাদী থেকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে অর্থ আদায় করতে পারেন।
মানহানি নিয়ে আইনে কি বলা আছে
বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৪৯৯ ধারায় বলা আছে যে, কোনো ব্যক্তির সুনাম নষ্ট হবে- এমন জেনেও যদি উদ্দেশ্যমূলকভাবে কেউ এমন কোনো উক্তি বা মন্তব্যের মাধ্যমে অথবা লেখার মাধ্যমে কিংবা কোনো চিহ্ন বা দৃশ্যমান উপস্থাপনার মাধ্যমে কারো নিন্দা বা দোষারোপ করেন, তাহলে তা মানহানি[Defamation] বলে গণ্য হবে।
১নং ব্যাখ্যা:Defamation of the Dead: যে মৃত ব্যক্তির জীবনকালে তার সম্পর্কে কোন ঘটনার আরোপ করা হলে তার মানহানি ঘটিত সেই মৃত ব্যক্তি সম্পর্কে অনুরূপ কোন ঘটনার আরোপ করা এবং সেই মৃত ব্যক্তির পরিবার পরিজনের বা অন্যান্য নিকট আত্মীয়ের মনকে পীড়িত করবার উদ্দেশ্যে অনুরূপ ঘটনার আরোপ করা মানহানি বলে গণ্য হবে।
২নং ব্যাখ্যা: Defamation of a Company or a Collection of Persons: কোন কোম্পানী বা সমিতি বা ব্যক্তিসমষ্টি সম্পর্কে সমষ্টিগত ভাগে কোন ঘটনার আরোপ করা মানহানি বলে গণ্য হবে।
এ ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে Priya Parameshwaran Pillai v. Union of India and Ors(W.P.(C)--774/2015) মামলার কথা বলা যেতে পারে। মামলা অনুসারে, প্রিয়া, একজন গ্রিনপিস কর্মী, তার ব্লগে লিখেছেন যে Essar Group এর মাধ্যমে স্থাপন করা বিদুৎ প্রকল্পের কারণে পরিবেশের অবনতি হচ্ছে। এরপর Essar Group প্রিয়া’র বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করা হয়।
এক্ষেত্রে প্রিয়া, তার যুক্তিতে, দাবি করেছিলেন যে প্রাইভেট কোম্পানিগুলিকে কোনও ব্যক্তির বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করার অধিকার দেওয়া উচিত নয়। কিন্তু তার বিরোধকে আদালত একপাশে রেখে দিয়েছিল, আর কোনো প্রশ্ন ও বিরোধ যোগ করার অনুমতি দেয়নি।
৩নং ব্যাখ্যা:Defamation by Innuendo: বিকল্প উপায়ে কিংবা বিদ্রূপাত্মকভাবে কোনো নিন্দা বা দোষারোপ করাও মানহানি বলে গণ্য হতে পারে।
৪নং ব্যাখ্যা: What is Harming Reputation: কোন ব্যক্তি সম্পর্কে কোন ঘটনার আরোপ প্রত্যক্ষভাবে বা পরোক্ষভাবে অন্যান্য ব্যক্তির দৃষ্টিতে নৈতিক বা বুদ্ধিগত চরিত্র হেয় না করলে, কিংবা তার বর্ণ বা সম্প্রদায় অথবা তার পেশার দিক হতে সেই ব্যক্তির চরিত্রকে হেয় না করলে কিংবা সেই ব্যক্তির খ্যাতি ক্ষুন্ন না করলে কিংবা তার দেহ বীভৎস বা ঘৃণ্য অবস্থায় বা যে অবস্থা সাধারণভাবে অরুচিকর বলে বিবেচিত সেই অবস্থায় আছে বলে বিশ্বাস সৃষ্টি না করলে, সেই ব্যক্তি সম্পর্কে সেই ঘটনার আরোপ তার খ্যাতি বা সুনাম নষ্ট করে নাই বলে বিবেচিত হবে।
মানহানির অপরাধ সংঘটিত হওয়ার উপাদান
দণ্ডবিধির ৪৯৯ ধারার বিধান অনুযায়ী মানহানি সংক্রান্ত আইনকে প্রতিষ্ঠিত করতে হলে যে সকল উপাদানের অস্তিত্ব থাকা বিশেষভাবেই অপরিহার্য তা নিম্নরূপ; যথা-
(১) কোন ব্যক্তির খ্যাতি বা সুনাম নষ্ট করবার উদ্দেশ্যে কোন ঘটনা আরোপ করতে হবে বা প্রকাশ করতে হবে।
(২) কোন ব্যক্তির খ্যাতি বা সুনাম নষ্ট করতে হলে অপরাধীকে হয় কোন কিছু (ক) উচ্চারিত অথবা (খ) পঠিত হবার জন্য উদ্দিষ্ট কথা দ্বারা অথবা (গ) চিহ্ন দ্বারা অথবা (ঘ) দৃশ্যমান বস্তু দ্বারা অথবা (ঙ) প্রতীক দ্বারা সেই ব্যক্তি সম্পর্কিত কোন ঘটনা আরোপ করতে হবে বা প্রকাশ করতে হবে।
(৩) এরূপ খ্যাতি বা সুনাম নষ্ট করবার পশ্চাতে অপরাধীকে কোন নির্দিষ্ট ব্যক্তির ন ক্ষতি করবার উদ্দেশ্য থাকতে হবে।
(৪) অপরাধীকে এরূপ বিশ্বাস করতে হবে যে, যদি সে এরূপ মানহানিকর ঘটনা - আরোপ করে বা প্রকাশ করে তা হলে কোন নির্দিষ্ট ব্যক্তির খ্যাতি বা সুনাম নষ্ট হবার আশঙ্কা আছে।
উপরোক্ত উপাদানসমূহ যদি কোন ব্যক্তির মধ্যে দেখা যায়, তা হলে তাকে মানহানি সংক্রান্ত অপরাধের জন্য দোষী করা যেতে পারে। এই ধারায় ১নং ব্যাখ্যা অনুযায়ী মৃত ব্যক্তির পক্ষেও মানহানিকর মামলা করা যেতে পারে।
মানহানির অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তি তার আত্মপক্ষ সমর্থনে কি কি প্রসঙ্গ উল্লেখ করতে পারে?
মানহানি অভিযোগের বিরুদ্ধে কোন কোন ব্যতিক্রমগুলো উপস্থাপন করা যেতে পারে?
দণ্ডবিধির ৪৯৯ ধারায় মানহানির সংজ্ঞা প্রদান কালে যে দশটি ব্যতিক্রমের বিবরণ দেয়া হয়েছে তা এ অপরাধের আত্মপক্ষ সমর্থন হিসেবে গণ্য করা হয়। এগুলি নিম্নরূপ—-
(১) জনকল্যাণের দিক হতে যে সত্য ঘটনা উদঘাটন বা প্রকাশ করা উচিত, তা আরোপ করা: যদি কোন ব্যক্তি সম্পর্কে কোন ঘটনা সত্য হয় এবং সে ঘটনার উল্লেখ বা প্রকাশ জনকল্যাণের খাতিরে প্রয়োজন হয়, তা হলে সেই ব্যক্তি সম্পর্কে সে ঘটনার আরোপ মানহানির অপরাধ হবে না।
(২) সরকারী কর্মচারীর আচরণ: কোন সরকারী কর্মচারীর দায়িত্ব সম্পাদনকালে বা তার আচরণ কিংবা সেই আচরণে তার চরিত্র যতটুকু পর্যন্ত প্রাসঙ্গিক
শুধু ততটুকু পর্যন্ত তার চরিত্র সম্পর্কে সরল মনে বা সরল বিশ্বাসে কোন মতামত প্রকাশ করলে তৎদ্বারা কোনরূপ মানহানির অপরাধ হবে না।
(৩) সরকারী বিষয়: কোন সরকারী বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিষয়ক কোন আচরণ এবং সে আচরণে সেই ব্যক্তির চরিত্র সম্পর্কে সরলমনে বা সরল বিশ্বাসে কোন মতামত প্রকাশ করলে তদ্বারা কোনরূপ মানহানির অপরাধ হবে না।
(৪) আদালত কার্যক্রমের রিপোর্ট প্রকাশ করা: কোন আদালত বা বিচারালয়ের কার্যক্রমের কিংবা অনুরূপ কার্যক্রমের ফলে কোন সত্য রিপোর্ট প্রকাশ করা মানহানির অপরাধ নহে। অর্থাৎ কোন বিচারালয়ের বিচারের পূর্বাহ্নক কার্যক্রম হিসেবে প্রকাশ্য আদালতে তদন্তকারী কোন জাষ্টিস অব দি পীস বা অন্য কোন অফিসার উপরোক্ত ধারার অর্থ অনুসারে একটি আদালত।
(৫) আদালতে সাব্যস্ত মামলার প্রধান দোষ ও গুণাবলী কিংবা সাক্ষীদেরও সংশ্লিষ্ট অন্যায়ের আচরণ: কোন বিচারালয় বা আদালত কর্তৃক সাব্যস্ত কোন দেওয়ানী বা ফৌজদারী মামলার প্রধান দোষ গুণাবলী সম্পর্কে কিংবা অনুরূপ কোন মামলার সহিত অন্যতম পক্ষ সাক্ষী বা এজেন্ট হিসেবে সংশ্লিষ্ট কোন ব্যক্তির আচরণ কিংবা সেই আচরণে সে ব্যক্তির চরিত্র যতদূর পর্যন্ত প্রাসঙ্গিক, ততদূর পর্যন্ত তার চরিত্র সম্পর্কে সরলমনে বা সরল বিশ্বাসে কোন মতামত প্রকাশ করলে তা মানহানির অপরাধ হবে না।
(৬) সরকারী কাজের দোষগুণ:
কোন কার্যের কর্তা কর্তৃক জনসাধারণের বিচারার্থে উপস্থিত কার্যের দোষগুণ সম্পর্কে কিংবা কার্যটিতে উহার কর্তার চরিত্র যতদূর পর্যন্ত প্রতিফলিত হয়েছে শুধু ততদূর পর্যন্ত তার চরিত্র সম্পর্কে কোন মত প্রকাশ করলে তা মানহানিকর অপরাধ হবে না। অর্থাৎ কোন কার্য প্রকাশ্যভাবে জনসাধারণের বিচারার্থে উপস্থাপিত হতে পারে কিংবা কার্যটির কর্তার যে ব্যবস্থা দ্বারা জনসাধারণের বিচারার্থে কার্যটির উপস্থাপন বুঝায়, সে ব্যবস্থা দ্বারাও কার্যটি জনসাধারণের বিচারার্থে উপস্থিত হতে পারে।
(৭) অপরের উপর আইনসঙ্গত ক্ষমতাবিশিষ্ট ব্যক্তি কর্তৃক সরল বিশ্বাসে নিন্দা:
যদি কোন ব্যক্তি, অপর কোন ব্যক্তির উপর আইন দ্বারা প্রতিষ্ঠিত বা সেই অপর ব্যক্তির সহিত সম্পাদিত চুক্তি দ্বারা প্রতিষ্ঠিত ক্ষমতা বা কর্তৃত্ব থাকে এবং সে ব্যক্তি যে সব বিষয়ে অনুরূপ আইনসঙ্গত ক্ষমতা বা কর্তৃত্ব সংশ্লিষ্ট যে সব বিষয়ে সরল বিশ্বাসে সেই অপর ব্যক্তির আচরণ সম্পর্কে তাকে তিরস্কার করে, তা হলে মানহানির অপরাধ হবে না।
(৮) ক্ষমতাবিশিষ্ট ব্যক্তির নিকট সরল বিশ্বাসে অভিযোগ উত্থাপন:
কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোন বিষয়ে অভিযোগ সে বিষয়ে সেই ব্যক্তির উপর যে সব ব্যক্তির ক্ষমতা বা কর্তৃত্ব আছে তাদের কারও নিকট সরল বিশ্বাসে উত্থাপন করা হলে, তা মানহানির অপরাধ হবে না।
(৯) কোন ব্যক্তি কর্তৃক নিজের বা অন্যের স্বার্থ সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে সরল বিশ্বাসে কোন নিন্দা আরোপ করা:
যদি কোন ব্যক্তির চরিত্র সম্পর্কে কোন নিন্দা আরোপ করা হয় এবং তা যদি আরোপকারী সরল বিশ্বাসে নিজের বা অন্যের স্বার্থ সংরক্ষণের বা জনকল্যাণ স্বার্থবিষয়ক সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে করে, তা হলে উহা মানহানিকর অপরাধ হবে না।
(১০) কোন ব্যক্তিকে তার হিতকল্পে কিংবা জনহিতকল্পে হুঁশিয়ারি দান বা সতর্কীকরণ:
কোন ব্যক্তিকে সরল বিশ্বাসে অপর কোন ব্যক্তি হুঁশিয়ারী দান বা সতর্কীকরণ মানহানি অপরাধ হবে না, যদি যে ব্যক্তিকে সতর্কতা দান করা হল সেই ব্যক্তির কল্যাণার্থে কিংবা সে ব্যক্তি অপর যে ব্যক্তির সহিত স্বার্থসংশ্লিষ্ট সেই অপর ব্যক্তির কল্যাণার্থে কিংবা জনকল্যাণার্থে সতর্কতার দান করা হয়ে থাকে।
তবে এ কথা মনে রাখা উচিত যে, ব্যতিক্রমগুলোতে(Exceptions) বর্ণিত ক্ষেত্রগুলোতে করা মন্তব্য বা কার্য সবিশ্বাসে (Good faith) করতে হবে। তা না হলে উল্লিখিত মন্তব্য বা কার্যগুলোও মানহানি হিসেবে গণ্য হবে।
মানহানি শিকার হলে কীভাবে আইনের আশ্রয় পাওয়া যাবে
মানহানির অভিযোগে ফৌজদারি ও দেওয়ানি উভয় ধরনের মামলা বা মোকদ্দমা দায়ের করার সুযোগ আছে। ফৌজদারি আদালতে নালিশি মামলা হিসেবে অভিযোগ দায়ের করতে হয়। যিনি মানহানির শিকার তিনি আদালতে অভিযোগ দায়ের করে জবানবন্দি প্রদানের মাধ্যমে মামলা দায়ের করতে হবে। আদালত সমন জারি করবেন অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে। মানহানি মামলায় সরাসরি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয় না। সমন দিলে আদালতে হাজির হয়ে জামিন না চাইলে সে ক্ষেত্রে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। অনলাইনে বা যেকোনো মাধ্যমে যদি মানহানির শিকার হন কেউ, তাহলে থানায় এজাহার দায়ের করতে হবে। সরাসরি আদালতে মামলা দায়ের করা যায় না। মানহানির কারণেÿ ক্ষতিপূরণ দাবি করে দেওয়ানি আদালতে মোকদ্দমা দায়ের করার সুযোগ রয়েছে। এ মোকদ্দমা দায়ের করতে হলে ক্ষতিপূরণের টাকার মূল্যের ওপর কোর্ট ফি জমা দিতে হয়। তবে বিচারপদ্ধতি দেওয়ানি মোকদ্দমার মতোই। মামলায় বাদী জয়ী হলে বিবাদী থেকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে অর্থ আদায় করতে পারেন।
মানহানি মামলার শাস্তি
মানহানি শিকার হলে ক্ষতিগ্রস্থ বা সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি চাইলে ফৌজদারী মামলা করতে পারেন অথবা দেওয়ানি মামলা করতে পারেন।ফৌজদারী আদালতে আবার দুই আইনের অধীনে মামলা করা যায় এবং শাস্তির বিধানও ভিন্ন । নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো,
ক) অভিযুক্ত ব্যক্তি মানহানির মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলে দণ্ডবিধির ৫০০ ধারা অনুযায়ী, অভিযুক্ত ব্যক্তির ২ (দুই) বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড বা উভয়বিধ দণ্ড হতে পারে। তবে দণ্ডবিধির অধীন সংঘটিত মানহানির ক্ষেত্রে ফৌজদারী কার্যবিধির ৩২ ধারা অনুযায়ী ম্যাজিস্ট্রেটের প্রকারভেদে অর্থদণ্ডের ক্ষমতা সর্বোচ্চ ১০ হাজার, ৫ হাজার ও ২ হাজার টাকা হওয়ার কারণে কোন ম্যাজিস্ট্রেট নির্ধারিত অর্থদণ্ডের অতিরিক্ত অর্থদণ্ড আরোপ করতে পারে না। আরো দণ্ডবিধির ৫০১ ও ৫০২ ধারা অনুসারে, যদি কোন ব্যক্তি মানহানিকর বলে পরিচিত এমন কোন বিষয় মুদ্রণ বা খোদাইকরণ করেন তবে তার ২ (দুই) বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড হতে পারে।
খ) ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮ এর ২৯ ধারা অনুযায়ী যদি কোনো ব্যক্তি ওয়েবসাইট বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক বিন্যাসে Penal Code (Act No. XLV of 1860) এর section 499 এ বর্ণিত মানহানিকর তথ্য প্রকাশ বা প্রচার করেন, তবে উক্ত ব্যক্তির উক্তরূপ কার্য হবে একটি অপরাধ এবং এজন্য তিনি অনধিক ২৫ (পঁচিশ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
গ) দেওয়ানী আদালতে মামলা করা হলে এবং বাদিপক্ষ মানহানি হয়েছে তা প্রমাণ করতে পারলে বিবাদীপক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে অর্থ আদায় করতে পারেন। তবে কোন ব্যক্তির মানসম্মানের মূল্য অর্থ দ্বারা পরিমাপ করা না গেলেও মানহানিকর উক্তি দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি বিভিন্ন অঙ্কের ক্ষতিপূরণ দাবি করে দেওয়ানি প্রতিকার চাওয়া হয়। দেওয়ানী কার্যবিধির অধিনে মানহানির মামলা করলে কত টাকার মামলা করা যাবে তা বাদীর সামাজিক মান মর্যাদার উপর নির্ভর করবে।
THE 5 ELEMENTS OF DEFAMATION The statement was communicated to a third party. the statement clearly refers to the plaintiff. The statement harmed the plaintiff's reputation. the statement is demonstrably false. the person who made the statement was at fault.
0 Comments