সর্বশেষ

6/recent/ticker-posts

12 Angry Men: আইন বিষয়ক মুভি

What is the main point of the movie 12 Angry Men?; What does the movie 12 Angry Men reveal about the social psychology of law?; What is the message of 12 Angry Men?; 12 angry men সিনেমার মূল বিষয় কি?; 12 angry men এর মূল পাঠ কি?; টুয়েলভ অ্যাংরি মেন এর তিনটি মূল বিষয় কি কি?; টুয়েলভ অ্যাংরি ম্যান নাটকের প্রধান বিষয় কি?; 12 angry men এর মূল গল্প কি?; 12 অ্যাংরি মেন এর টার্নিং পয়েন্ট কি?; 12 angry men কি দেখায়?; Legal analysis of 12 angry men movie pdf; 12 Angry Men movie analysis; Legal analysis of 12 angry men movie download; Legal analysis of 12 angry men movie free; Who killed the father in 12 Angry Men; 12 Angry Men script; Was the boy guilty in 12 Angry Men; 12 Angry Men remake; Lawyer movies Bollywood; Top 10 law movies; Lawyer movies on Netflix; Best lawyer movies on Netflix; Movies about law and justice; Best law movies Bollywood; Legal drama movies; Legal movies streaming; ১. To Kill a Mockingbird (1962); ২. 12 Angry Men (1957); ৩. A Few Good Men (1992); ৪. The Verdict (1982); ৫. Anatomy of a Murder (1959); ৬. Philadelphia (1993); ৭. Primal Fear (1996); ৮. My Cousin Vinny (1992); ৯. Erin Brockovich (2000); ১০. The Firm (1993); ১১. The Lincoln Lawyer (2011); ১২. A Time to Kill (1996); ১৩. The Judge (2014); ১৪. Michael Clayton (2007); ১৫. Inherit the Wind (1960); ১৬. Runaway Jury (2003); ১৭. The Client (1994); ১৮. Amistad (1997); ১৯. Presumed Innocent (1990); ২০. Kramer vs. Kramer (1979); ২১. Conviction (2010); ২২. The Pelican Brief (1993); ২৩. Marshall (2017); ২৪. Snow Falling on Cedars (1999); ২৫. Jagged Edge (1985); ২৬. A Civil Action (1998); ২৭. Bridge of Spies (2015); ২৮. Suspect (1987); ২৯. The People vs. Larry Flynt (1996); ৩০. Witness for the Prosecution (1957); ৩১. Dark Waters (2019); ৩২. The Devil’s Advocate (1997); ৩৩. The Accused (1988); ৩৪. Roman J. Israel, Esq. (2017); ৩৫. Murder in the First (1995); ৩৬. The Rainmaker (1997); ৩৭. Judgement at Nuremberg (1961); ৩৮. High Crimes (2002); ৩৯. The Whole Truth (2016); ৪০. Breakdown (1997); ৪১. Class Action (1991); ৪২. And Justice for All (1979); ৪৩. North Country (2005); ৪৪. The Gingerbread Man (1998); ৪৫. A Murder of Crows (1998); ৪৬. Beyond a Reasonable Doubt (1956); ৪৭. The Counselor (2013); ৪৮. Changing Lanes (2002); ৪৯. Extreme Measures (1996); ৫০. The Paper Chase (1973); ৫১. Breaker Morant (1980); ৫২. Paths of Glory (1957); ৫৩. True Believer (1989); ৫৪. Runaway Jury (2003); ৫৫. Defending Your Life (1991); ৫৬. Sleepers (1996); ৫৭. Rules of Engagement (2000); ৫৮. The Man Who Shot Liberty Valance (1962); ৫৯. Laws of Attraction (2004); ৬০. The Chamber (1996); ৬১. Fracture (2007); ৬২. Guilty as Sin (1993); ৬৩. Absolute Power (1997); ৬৪. Criminal Law (1988); ৬৫. Witness (1985); ৬৬. The Children Act (2017); ৬৭. Court (2014) (ভারতীয়); ৬৮. Pink (2016) (ভারতীয়); ৬৯. Section 375 (2019) (ভারতীয়); ৭০. Shahid (2012) (ভারতীয়); ৭১. Mulk (2018) (ভারতীয়); ৭২. No One Killed Jessica (2011) (ভারতীয়); ৭৩. Damini (1993) (ভারতীয়); ৭৪. Talvar (2015) (ভারতীয়); ৭৫. Jolly LLB (2013) (ভারতীয়); ৭৬. Jolly LLB 2 (2017) (ভারতীয়); ৭৭. Ohm Shanthi Oshaana (2014) (ভারতীয়); ৭৮. Visaranai (2015) (তামিল); ৭৯. Nerkonda Paarvai (2019) (তামিল); ৮০. Article 15 (2019) (ভারতীয়); ৮১. The Judge (2014); ৮২. The Life of David Gale (2003); ৮৩. Suits (2011-2019) (টিভি সিরিজ); ৮৪. Better Call Saul (2015-2022) (টিভি সিরিজ); ৮৫. Law Abiding Citizen (2009); ৮৬. Justice for All (1979); ৮৭. The General’s Daughter (1999); ৮৮. The Exorcism of Emily Rose (2005); ৮৯. The Good Wife (2009-2016) (টিভি সিরিজ); ৯০. The Good Fight (2017-2021) (টিভি সিরিজ); ৯১. Liar Liar (1997); ৯২. I Am Sam (2001); ৯৩. Mississippi Burning (1988); ৯৪. Unforgiven (1992); ৯৫. The Mauritanian (2021); ৯৬. Just Mercy (2019); ৯৭. The Trial of the Chicago 7 (2020); ৯৮. The Assistant (2019); ৯৯. Trial by Fire (2018); ১০০. On the Basis of Sex (2018);


 12 Angry Men: আইন বিষয়ক মুভি

12 Angry Men মূলত যুক্তিসঙ্গত সন্দেহ (reasonable doubt) এবং ন্যায়বিচারের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠা ১৯৫৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত একটি কালজয়ী মার্কিন চলচ্চিত্র যা রেজিনাল্ড রোজ(Reginald Rose) এর লেখা নাটকের উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে। মুভিটি পরিচালনা করেছেন সিডনি লুমেট(Sidney Lumet) এবং এতে প্রধান ভূমিকায় অভিনয় করেছেন হেনরি ফন্ডা(Henry Fonda)। এটি আমেরিকান বিচার ব্যবস্থার তথা আমেরিকান কোর্টরুম ড্রামা(courtroom drama) ক্লাসিক যা ন্যায়বিচার, পক্ষপাত, এবং মানবিক মূল্যবোধ নিয়ে প্রশ্ন তোলে। মুভিটি আদালত ও বিচারব্যবস্থা নিয়ে একটি জটিল এবং মনস্তাত্ত্বিক কাহিনী তুলে ধরেছে, যেখানে অপরাধী ও নির্দোষের প্রশ্নে ন্যায়বিচারের সন্ধান করা হয়।  

কাহিনী সংক্ষেপ:

সিনেমার শুরুতে আমরা দেখতে পাই নিউইয়র্কের কান্ট্রি কোর্টরুমে একটি হত্যাকাণ্ডের মামলার বিচার চলছে যেখানে বিচারক একটি মামলা পরিচালনা করছেন একটি ১৮ বছরের একটি ছেলে তার বাবাকে ছুরি মেরে হত্যার অভিযোগে। তখনকার আদালতের নিয়ম ছিল বিচারক মামলার সর্বশেষ রায় দিত জুরি বোর্ডের সিদ্ধান্তের উপর ভিত্তি করে।

দেখা যায় যে, তখন আদালত বাদি বিবাদি দুই পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে ১২ জনের জুরি বোর্ডের উপর দায়িত্ব দেয় যে, তারা যেন পুরো বিষয়টা ঠিকভাবে বিচার বিশ্লেষণ করে আদালতকে জানায় যে, অভিযুক্ত ছেলেটি দোষী নাকি নির্দোষ। এরপরই বোর্ডের ১২ জনকে একটি আলাদা রুম দেওয়া হয়৷ যেখানে তাঁরা নিজেদের মধ্যে আলাপ আলোচনা করে আদালতকে জুরি সর্বশেষ সিদ্ধান্ত জানাবে, এই ১২ জন ছিল ভিন্ন ভিন্ন পেশার লোক এবং একে অপরের অপরিচিত৷ 

রুমের মাঝে টেবিলে সাজানো চেয়ারে জুরি বোর্ডের ১২ জন তাদের নিজ নিজ সিরিয়াল নম্বর অনুযায়ী বসে আলোচনা করে মামলার রায় নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য সেখানে জুরি নাম্বার-১ এর ক্যারেক্টার টা হচ্ছে অনেকটা ক্লাস ক্যাপ্টেনের মতো সবাইকে একত্রিত করে সবার ভোট চায় যে, কে কে মনে করছেন অভিযুক্ত ছেলেটি দোষী এবং একে মনে করছে ছেলেটি আসলে নির্দোষ। উল্লেখ্য, ভোটের আগে সবাইকে মনে করিয়ে দেন যে, তাদের ১২ জন এর মধ্যে শুধুমাত্র ০১ জনও যদি দ্বিমত পোষণ করে তাহলে তারা এই রুম থেকে বের হবেন না যতক্ষণ পর্যন্ত সবাই ঐকমত্যে না পৌঁছায়। কারণ মামলায় দোষী প্রমাণিত হলে ছেলেটিকে ফাঁসিতে ঝুলতে হবে। এমন সেনসিটিভ মামলার ক্ষেত্রে মনে সামান্য যৌক্তিক সন্দেহ  যদি আসে যে, কোনও ভাবে ছেলেটির সাথে Injustice হবে তবে ছেলেটিকে দোষী বানানো যাবে না। 

দেখা যায় যে, শুধু জুরি নাম্বার-৮ (Henry Fonda অভিনীত) ছাড়া জুরি বোর্ডে ১২ জনের ১১ জনই প্রাথমিক পর্যায়ের ভোটে ছেলেটিকে দোষী হিসেবে ভোট দেয়।  কেননা ছেলেটিকে দোষী মনে করার যথেষ্ট কারণ ছিল। কারণ গত ০৬ দিন যাবত শুনানিতে সব সাক্ষ্য-প্রমাণ ছিল তার বিপক্ষে ছিল। এই মামলার দুজন সাক্ষীর মধ্যে প্রথম সাক্ষী আদালতে জানায় যে, সেদিন রাতে সে তার জানালা দিয়ে দেখেছিল যে, ছেলেটি ছুরি মেরে তার বাবাকে হত্যা করছে। আরেক সাক্ষী জানান, সেদিন রাতে লোকটি মারা যাবার আগে ছেলেটাকে চিৎকার করে তার বাবাকে মেরে ফেলার হুমকি দিতে শুনেছে সে। আর এর কিছুক্ষণ পরে লোকটিকে ফ্লোরে মরে পড়ে থাকতে দেখেছে এবং ছেলেটিকে বাড়ি থেকে পালিয়ে যেতে দেখেছে সে। 

আর অন্যান্য সাক্ষ্য প্রমাণের কারণে ১২ জনের মধ্যে ১১ জনই তাঁকে দোষী মনে করে কেবল একমাত্র জুরি নাম্বার-৮ ছেলেটিকে দোষী কিংবা নির্দোষ কোনটাই বিবেচনা না করে তাদের বিরোধিতা করে বলেন, সবাই মিলে ঘটনাটি চুলচেরা বিশ্লেষণ করা উচিত। 

মুভিতে দেখা যায় যে, একে একে সিরিয়াল অনুযায়ী জুরি মেম্বাররা তাদের নিজেদের ভোটের পক্ষে নিজ নিজ যুক্তি তুলে ধরছেন। আর এখানে শুরুতে এই মামলা দু জন প্রধান সাক্ষীর বক্তব্য সামনে আনা হয় এবং আরও কিছু ব্যাপার তুলে ধরা হয় যে, ছেলেটির অতীত ঘেঁটে দেখা গেছে, ছেলেটি বস্তিতে বড় হয়েছে এবং ছুরি চালাতেও সে ভালই এক্সপার্ট। ছেলেটি এর আগেও চুরি ছিনতাই মারামারি করার অপরাধে জেলও খেটেছে। আবার তার উকিলও এবার তাঁকে নির্দোষ প্রমাণ করতে পারছেন না। তখন জুরি নাম্বার-৮ বলে হয়তো সে আসলে দোষী। কিন্তু তারপরও একজন আসামীর উকিল সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে তাকে নির্দোষ প্রমাণ করতে। আর তা না পারলেও অন্তত শাস্তি কমানোর জন্য যথেষ্ট চেষ্টা তদবির করবে। কিন্তু ছেলেটির উকিল কোনও চেষ্টাই করেনি তার পক্ষে কোনো কিছু আদালতের কাছে তুলে ধরতে। এর পর তারা হত্যাকাণ্ডে ব্যবহার করা ছুরিটির প্রসঙ্গ তুলে ধরা হয়। বলা হয় যে, এই ছুরিটি সচরাচর পাওয়া যায় না এবং ওই এলাকার দোকানে মাত্র এক পিসই ছিল। এছাড়া বস্তিতে বড় হওয়া ছেলে এমন কাজ করতে পারে বলে কয়েকজন যুক্তি দেয়। কিন্তু তখন জুরি নাম্বার-৮ তাঁর পকেট থেকে দেখতে  হুঁবুহু দেখতে একরকম আরো একটি ছুরি বের করে দেখালে সবাই অবাক হয়ে যায়। সে সবাইকে বলে মাত্র ছয় ডলারে পাশের এলাকার এক দোকান থেকে সেই ছুরি কিনে নিয়ে এসেছে। এরপর বাকি জুরি মেম্বাররা তাদের সিদ্ধান্তে অটল থাকে এবং ছেলেটিকে দোষী বলে। 

এরপর দেখা যায় যে, আবার দ্বিতীয়বারের মতো জুরি নাম্বার-৮ ছাড়া ভোট গণনা করা হয় এবং তা হয় গোপন ভোটের মাধ্যমে। এই গোপন ভোটে তাঁদের মধ্যে সবাই যদি মনে করে ছেলেটি দোষী তাহলে জুরি নাম্বার-৮  আর দ্বিমত করবে না–মর্মে জানান ।কিন্তু এর মধ্যে যদি একজনও সন্দেহ প্রকাশ করে যে ছেলেটি হয়তো দোষী না তাহলে তারা আরও বিস্তর আলোচনা করবে। এই বিষয়ে এবার ১১ টি ভোটের মধ্যে ১০টি  ভোট পড়ে ছেলেটি দোষী হিসেবে এবং একটি ভোট পড়ে নির্দোষ হিসেবে। তখন সবাই উত্তেজিত হয়ে গেলে জুরির মধ্যে সবথেকে বয়স্ক জুরি নাম্বার-৯ বলে নির্দোষ ভোটটি তিনি দিয়েছেন।  তিনি বলেন যে, জুরি নাম্বার-৮এর মনে যে সন্দেহ/প্রশ্ন তৈরি হয়েছে যে ছেলেটি হয়তো দোষী না। আর এই কারণে একাই সব জুরি মেম্বারদের সাথে বিপরীত এই আলোচনার যুক্তি দিয়ে যাচ্ছে। হয়তো ছেলেটি দোষী। কিন্তু আমি জুরি নাম্বার-৮ এর উদ্দেশ্য কে সম্মান করি এবং তাঁর সন্দেহ দূর হওয়া উচিত, তাই আমি আমার ভোট পরিবর্তন করেছি এবং এই ব্যাপারে আরও গভীরভাবে আলোচনা করতে চাই। 

এর পরে জুরি নাম্বার-১২ সবার সামনে কিছু অসাধারণ যুক্তি তুলে এনে বলেন যে, এই মামলার প্রধান সাক্ষীদের একজন বয়স্ক লোক যে কিনা তাঁর বাড়ির সিঁড়ির নিচে থাকে এবং অন্যজন রেললাইনের রাস্তার পাশে। বলা হয় যে, সেদিন রাতে খুন হওয়ার সময় ওই মুহূর্তে ট্রেন যাচ্ছিল। আর ট্রেনের এত বিকট শব্দ হয় যে তার কারণে সাধারণত সামনাসামনি কথা বললেও শোনা যায় না। তাই খুন হওয়ার আগে বাবার সাথে ছেলেটি চিৎকার করে বলছিল যে আমি তোমাকে খুন করে ফেলবো– যা বয়স্ক লোকটির ঠিকমতো শুনতে পাওয়ার কথা না অথবা শুনতে পেলেও কে চিৎকার করছে তা বুঝতে পারার কথা না। অন্যদিকে রাস্তার অপর পাশে মধ্য বয়স্ক মহিলাটি নাকি ট্রেনে করে যাওয়ার সময় ট্রেনের জানালা দিয়ে ছেলেটিকে তার বাবাকে খুন করতে দেখেছে। 

জুরি নাম্বার-১২ এর  সাথে জুরি নাম্বার-৯ আরও কিছু যুক্তি তুলে ধরলে জুরি নাম্বার-১২ তাঁর ভোট পরিবর্তন করে ছেলেটির নির্দোষ পক্ষে ভোট দেয়। এরপর জুরি নাম্বার-১১ প্রশ্ন তোলে যে, যদি ছেলেটি সত্যিই হত্যা করে থাকত তাহলে হত্যার কয়েক ঘণ্টা পরে কেন ঘটনাস্থলে আবার আসবে ? তার তো জানা কথা যে, হত্যার সময় মধ্য বয়স্ক মহিলাটি তাঁকে দেখে ফেলেছিল, কারণ সে তখন চিৎকার করছিল। তাছাড়া খুন করা ছুরির মধ্যে হাতের ছাপও মুছে ফেলার সুযোগ ছিল।জুরি নাম্বার-৮ আবার বলে অনেক মানুষ রাগের মাথায় একে অন্যকে বলে ফেলে যে ‘আমি তোকে খুন করে ফেলব’। তাই বলে কি কেউ খুন করে ফেলে?

এরপর আরও একবার ভোট নেওয়া হলে জুরি নাম্বার-১১  তাঁর ভোট পরিবর্তন করে দোষী থেকে নির্দোষ ভোট দেয়। এরপর নাম্বার-৭ জুরি ‘জুরি নাম্বার-৮’ কে বলে সাক্ষী দেওয়া বুড়ো লোকটার হত্যার ১৫ সেকেন্ড পরেই ছেলেটিকে পালাতে দেখেছিল। তখন ‘জুরি নাম্বার-৮’ বয়স্ক লোকটির বাড়ির নকশা সবাইকে দেখিয়ে তাঁর মতো হাঁটার স্টাইলে সময় ধরে হিসাব করে দেখিয়ে দেয় যে, লোকটি ঘর থেকে দরজা পর্যন্ত যেতে তার কমপক্ষে ৪৫ সেকেন্ড সময় লাগে। অথচ সে আদালতে বলেছে চিৎকার শোনার পর কারো মাটিতে ধপ করে পড়ে যাওয়ার আওয়াজ পেয়ে মাত্র ১৫ সেকেন্ডে সে দরজায় পৌঁছে ছেলেটিকে দেখতে পেয়েছিল যা কি না তার পক্ষে সম্পূর্ণ অসম্ভব। ‘জুরি নাম্বার-৮’ বাকি সবাইকেই ব্যাপারটি বুঝতে পারলেও ‘জুরি নাম্বার-৩’ মানতে চায় না এবং বলে আপনারা এ সব কী শুরু করেছেন সামান্য একটা বস্তির ছেলেকে বাঁচানোর জন্য। তখন ‘জুরি নাম্বার-৮’ তাকে বলে তাঁর মনে হয় না, ‘জুরি নাম্বার-৩’ এখানে সঠিক বিচার বিশ্লেষণ করতে এসেছে, সে ব্যক্তিগতভাবে হয়তো চায় ছেলেটির মৃত্যুদণ্ড হোক। এই কথা শুনে ‘জুরি নাম্বার-৩’ প্রচণ্ড রেগে গিয়ে ‘জুরি নাম্বার-৮’ এর সাথে ঝগড়া বাঁধিয়ে ফেলে এবং এক পর্যায়ে বলে আমি তোমাকে খুন করে ফেলবো। এই পর্যায় ‘জুরি নাম্বার-৮’ তার নিজের Point of view প্রমাণ করে বলে যে রাগের মাথায় ‘জুরি নাম্বার-৩’ তাকে মেরে ফেলার হুমকি দিলেও বাস্তবে তা করতে চায় না, সেটা শুধুই রাগের মাথায় বলা হয়।

এরপর আরও একবার ভোট নেওয়া হয়৷ ‘জুরি বোর্ডের ১২ জনের মধ্যে নিজেদের ভোট পরিবর্তন করে ০৬জন পক্ষে এবং ০৬ জন বিপক্ষে ভোট দেন। অপরদিকে ভোটের পর অভিযুক্ত ছেলেটি আদালতে যে বক্তব্য দিয়েছিল, তা নিয়ে ‘জুরি নাম্বার-৪’ প্রশ্ন তোলে তিনি বলেন যে, হত্যার রাতে ছেলেটি কী করছে তার সবটা মনে করতে পারছেন না। এমনও তো হতে পারে যে ছেলেটি সত্য কথা বলতে চাইছে না। 

এর পর  জুরি বোর্ডে একে একে স্মৃতিশক্তি, উচ্চতায় বাবা আর ছেলে সাত ইঞ্চি উচ্চতার তফাত সত্ত্বেও ছেলেটি কী ভাবে তাঁর বাবাকে উপর থেকে নিচের দিকে ছুরি মারতে পারে– এসব নিয়েও যুক্তি হয়। 

ইন্টারেস্টিং ফ্যাক্ট  তুলে ধরেন যে, প্রথম সাক্ষী মধ্যবয়স্ক মহিলাটি নিজের বয়স লুকিয়ে আদালতে সাক্ষী দিতে চশমা পরে আসেননি। বলা হয়েছে যে, কেউই চশমা পরে ঘুমায় না। আর মহিলাটিও সেদিন রাতে যখন ঘুমাতে যাওয়ার সব প্রস্তুতি শেষ করে বিছানায় গিয়েছিল, তখন সেই মুহূর্তে চশমা ছাড়া এতখানি দূর থেকে খুনিকে একদম স্পষ্ট দেখা মহিলাটির পক্ষে অসম্ভব৷  তাঁর দেখাই তো ভুল হতে পারে এমন যুক্তি পাওয়ার ‘জুরি নাম্বার-৪ এর মনেও ছেলে দোষী না এমন যুক্তিপূর্ণ সন্দেহ তৈরি হয় এবং ভোট দেন ছেলে্টি নির্দোষ। 

আর এখন ‘জুরি নাম্বার-৩’ ছাড়া বাদবাকি সবাই মেনে নেয় ছেলেটি আসলে নির্দোষ। তখন ‘জুরি নাম্বার-৩’ এর  কাছে এখনও ছেলেটিকে দোষী মনে করার কারণ জিজ্ঞাসা করে। তখন ‘জুরি-৩’ চিৎকার করে কথা বলতে থাকেন এবং পকেট থেকে তাঁর আর তাঁর টিনেজ ছেলের ছবি বের করে টেবিলে ছুঁড়ে মারেন। সবাই বুঝতে পারে তারা। আসলে নিজের ছেলের সাথে সম্পর্ক খারাপ যাচ্ছে আর তা নিয়ে প্রচণ্ড রকম Frustration থেকে তিনি এরকম রেগে আছেন। আর সেই রাগ এসে পড়েছে খুনের দায়ে অভিযুক্ত ছেলেটির উপর। এরপর রাগে নিজের আর ছেলের ছবি ছিঁড়ে ফেলে,কান্নায় ভেঙে পরে আর কাঁদতে কাঁদতে ১২জনের মধ্যে শেষ জুরি হিসেবে বলতে থাকেন Not guilty অর্থাৎ তিনি সিদ্ধান্ত জানায় যে, অভিযুক্ত ছেলেটির নির্দোষ। এরপর সবাই বিচারককে জুরি বোর্ডের সিদ্ধান্ত জানার জন্য সেই রুম থেকে বেরিয়ে পড়েন। জুরি নাম্বার-৮’ তখন এই অবস্থায় সহমর্মিতা দেখিয়ে জুরি নাম্বার-৩’ কান্না থেকে তুলে তার কোটটি পড়িয়ে দেন। বিচারক জুরি বোর্ডের সিদ্ধান্ত জানিয়ে সবাই আদালত থেকে যে যার মতো বেরিয়ে আসে। বাইরে এসে জুরি নাম্বার-৮’  ৯ নম্বর সাথে পরিচিত হয় এবং হ্যান্ডশেক করে দুজন নিজেদের মত দুই থেকে চলে যায়। আর এখানেই শেষ হয়ে যায় ইতিহাস বিখ্যাত এইকোর্ট ড্রামা মুভিটি।

মুভির পুরোটা সময় তাদের মধ্যে একটি উত্তেজনাপূর্ণ মানসিক ও নৈতিক টানাপোড়েন চলে, যা এক জটিল এবং আবেগঘন পথে পরিচালিত হয়।

"12 Angry Men" এর আইনি বিষয়াবলি:

"12 Angry Men" সিনেমাটিতে বেশ কিছু আইনি বিষয়কে গভীরভাবে তুলে ধরা হয়েছে, যা বিচারব্যবস্থা এবং আইন সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ ধারণা দেয়। সিনেমাটি একটি জুরি রুমে সংঘটিত হলেও, এটি বিচারব্যবস্থার নীতিমালা, যুক্তি এবং ন্যায়বিচারের বিভিন্ন দিককে কার্যকরভাবে তুলে ধরে। নিচে "12 Angry Men" সিনেমায় উপস্থাপিত আইনি বিষয়গুলোর বিশদ আলোচনা করা হলো:

১. যুক্তিসঙ্গত সন্দেহ (Reasonable Doubt):

ক) যুক্তিসঙ্গত সন্দেহ হলো আইনি বিচারব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ নীতি, যা অনুসারে যদি কোনো ক্ষেত্রে যুক্তিসঙ্গত সন্দেহ থাকে, তবে অভিযুক্তকে নির্দোষ ঘোষণা করা উচিত।

খ) মুভির ৮ নম্বর জুরি সদস্য এই নীতির ভিত্তিতে তর্ক শুরু করেন, কারণ তিনি মনে করেন প্রমাণগুলো যথেষ্ট পরিস্কার নয় এবং এর মধ্যে ফাঁকফোকর রয়েছে।

গ) যুক্তিসঙ্গত সন্দেহের ভিত্তিতে রায় দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা এবং দায়বদ্ধতা কীভাবে ন্যায়বিচারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, সেটি এই মুভির প্রধান আইনি বার্তা।

২. পক্ষপাত ও ব্যক্তিগত মনোভাব (Bias and Personal Prejudice):

ক) আইনানুযায়ী জুরি সদস্যদের নিরপেক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা থাকলেও, প্রত্যেক জুরি সদস্য তাদের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা এবং পক্ষপাত দ্বারা প্রভাবিত হন।

খ) একজন সদস্য অভিযুক্তের জাতিগত পটভূমির কারণে তার বিরুদ্ধে কথা বলেন, অন্য সদস্য তার নিজের জীবনের পারিবারিক অভিজ্ঞতা থেকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।

গ) এই বিষয়টি জুরি সিস্টেমে পক্ষপাতের সমস্যা এবং এর কারণে নির্দোষ কেউ কীভাবে ভুলভাবে দোষী সাব্যস্ত হতে পারে, সেটি তুলে ধরে।

৩. সাক্ষ্য এবং প্রমাণের গুরুত্ব (Importance of Evidence and Testimonies):

ক) মুভিতে প্রমাণ এবং সাক্ষ্যের গুরুত্ব বেশ ভালোভাবে ফুটে ওঠে। প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষ্য এবং প্রমাণগুলোর সঠিকতা যাচাই করার মাধ্যমে বোঝা যায় যে সবকিছু ঠিকঠাক নয়।

খ) একটি প্রত্যক্ষদর্শীর দাবির ভিত্তিতে প্রাথমিকভাবে অভিযুক্তকে দোষী মনে হলেও, জুরি সদস্যরা বিশ্লেষণ করে দেখেন যে সেই দাবিতে ত্রুটি রয়েছে।

গ) এটি প্রমাণের সঠিকতা যাচাই এবং পর্যালোচনার মাধ্যমে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার ওপর আলোকপাত করে।

৪. জুরি সদস্যদের দায়িত্ব এবং নৈতিকতা (Duty and Ethics of Jurors):

ক) জুরি সদস্যদের কাজ হলো প্রমাণের ওপর ভিত্তি করে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা। তাদের ব্যক্তিগত মতামত বা পক্ষপাত তাদের সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করা উচিত নয়।

খ) মুভিতে ৮ নম্বর জুরি সদস্য বাকিদের এ দায়িত্ব স্মরণ করিয়ে দেন এবং বোঝান যে তারা শুধু দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে চাইলে একজন নির্দোষ মানুষ শাস্তির সম্মুখীন হতে পারে।

গ) ন্যায়বিচারের জন্য জুরি সদস্যদের যে সতর্ক ও নৈতিক হতে হয়, মুভিটি সেটি খুব স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছে।

৫. সাক্ষ্যকে বিশ্লেষণ ও পুনর্মূল্যায়ন (Reevaluation of Testimonies):

ক) মুভির জুরি সদস্যরা প্রত্যেকটি প্রমাণ এবং সাক্ষ্য পুনরায় বিশ্লেষণ করেন, যা দেখায় যে শুরুতে দেখা সহজবোধ্য প্রমাণগুলো আদতে সঠিক নাও হতে পারে।

খ) প্রত্যক্ষদর্শীদের ভুলভ্রান্তি এবং প্রমাণের ফাঁকফোকর চিহ্নিত করে বোঝা যায়, তাড়াহুড়ো করে একটি মামলা নিষ্পত্তি করলে কী ধরনের ভুল হতে পারে।

গ) এটি আদালতে সাক্ষ্য এবং প্রমাণ পুনর্মূল্যায়নের গুরুত্ব তুলে ধরে।

৬. বিচারব্যবস্থায় মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব (Psychological Influence in Judicial Process):

ক) মুভিটিতে দেখা যায় যে বিভিন্ন জুরি সদস্য তাদের নিজস্ব অভিজ্ঞতা, অবচেতন পক্ষপাত এবং মানসিক অবস্থা দ্বারা প্রভাবিত হন, যা তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করে।

খ) এই মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব বিচারপ্রক্রিয়ায় ন্যায়বিচার বাধাগ্রস্ত করতে পারে। তাই জুরি সদস্যদের ব্যক্তিগত মতামত ও অভিজ্ঞতা সচেতনভাবে বাদ দিয়ে প্রমাণের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।

গ) মুভিটি বিচারব্যবস্থায় এই মনস্তাত্ত্বিক প্রভাবের বিষয়ে সতর্ক করে, যাতে বিচারকরা এবং জুরি সদস্যরা ব্যক্তিগত মতামত বাদ দিয়ে ন্যায়বিচারের প্রতি মনোযোগী হন।

৭. আলোচনা এবং মতবিনিময়ের গুরুত্ব (Importance of Deliberation and Open Discussion):

ক) "12 Angry Men" দেখায় যে, একটি মামলার বিষয়ে বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি থেকে আলোচনা এবং মতবিনিময় করা কতটা গুরুত্বপূর্ণ।

খ)যদি ৮ নম্বর জুরি সদস্য সবার সাথে বিস্তারিত আলোচনা না করতেন, তাহলে একজন নির্দোষ মানুষ ভুল শাস্তি পেতে পারত।

গ) এটি বোঝায় যে মুক্ত আলোচনা এবং ভিন্নমতের গুরুত্ব বিচারব্যবস্থার ক্ষেত্রে অপরিহার্য।

আইনি যুক্তিতর্ক এবং আলোচনা:

১. যুক্তি ও বিচার প্রক্রিয়ার গুরুত্ব:

ক) মুভিটি শুরু হয় যখন ১১ জন জুরি সদস্য কিশোরকে দোষী মনে করে, কিন্তু একজন সদস্য (জুরি ৮ নম্বর) তার নির্দোষতার পক্ষে দাঁড়ান।

খ) তিনি বলেন, "আমরা একটি মানুষের জীবন নিয়ে কথা বলছি। আমাদের নিশ্চিত হতে হবে যে সে সত্যিই অপরাধী।"

গ) যুক্তির মাধ্যমে তিনি অন্যদের বোঝাতে শুরু করেন যে মামলার প্রমাণগুলো বাস্তবিক এবং নিখুঁত নয়।

২. প্রমাণের অসঙ্গতি:

ক) মুভির প্রতিটি মুহূর্তে জুরি ৮ নম্বর সদস্য বিভিন্ন প্রমাণ ও সাক্ষ্যের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে।

খ) প্রথম সাক্ষী: একজন বৃদ্ধ ব্যক্তি, যিনি দাবি করেন তিনি অভিযুক্তকে তার বাবাকে হত্যা করতে দেখেছেন। জুরি ৮ নম্বর প্রমাণ করেন যে বৃদ্ধ তার বয়স ও শারীরিক অবস্থার কারণে ঘটনাটি সঠিকভাবে দেখার ক্ষমতা রাখেন না।

গ) দ্বিতীয় সাক্ষী: একজন মহিলা জানায় যে সে তার জানালা থেকে হত্যাকাণ্ডটি ঘটতে দেখেছে। কিন্তু পরে দেখা যায়, সে চশমা ছাড়া দূর থেকে স্পষ্টভাবে কিছু দেখতে সক্ষম নয়।

ঘ) ছুরির প্রমাণ: হত্যায় ব্যবহৃত ছুরিটিকে "অন্য কোথাও পাওয়া যাবে না" বলে দাবি করা হয়। কিন্তু জুরি ৮ নম্বর একটি একই রকম ছুরি দোকান থেকে কেনেন, যা দেখায় এই প্রমাণও সন্দেহজনক।

৩. যুক্তিসঙ্গত সন্দেহ (Reasonable Doubt):

ক) মুভিটির কেন্দ্রীয় আইনি থিম হলো "Reasonable Doubt"।

খ) জুরি ৮ নম্বর বলেন, যদি কোনো সন্দেহ থাকে, তাহলে অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করা উচিত নয়।

গ) ধীরে ধীরে অন্য জুরিরাও এই যুক্তি মেনে নেয় যে প্রমাণগুলো যথেষ্ট নয় এবং সন্দেহ থেকে যায়।

৪. পক্ষপাত এবং ব্যক্তিগত অনুভূতির প্রভাব:

ক) মুভিটি দেখায় কীভাবে ব্যক্তিগত পক্ষপাত, সামাজিক অবস্থান, এবং অনুভূতিগুলো ন্যায়বিচারের পথে বাধা হতে পারে।

খ) এক জুরি সদস্য কিশোরের দরিদ্র ও অপরাধপ্রবণ এলাকা থেকে আসার কারণে তার বিরুদ্ধে পক্ষপাতদুষ্ট ছিলেন।

গ) শেষের দিকে দেখা যায়, তার নিজের জীবনের সমস্যা এবং তার সন্তানের প্রতি তিক্ত অনুভূতি এই পক্ষপাত তৈরি করেছে।

৫. সামাজিক সংবেদনশীলতা এবং নৈতিকতা:

ক) মুভিটি দেখায় যে ন্যায়বিচারের জন্য কেবল আইন নয়, বরং মানবিক অনুভূতি ও নৈতিকতাও জরুরি।

খ) অভিযুক্তের সামাজিক অবস্থান তার প্রতি অন্যায় পক্ষপাতের কারণ হয়েছিল।


রায়ের ফলাফল:

  1. সর্বসম্মত "Not Guilty":

ক) দীর্ঘ আলোচনার পর, সব জুরি সদস্য একমত হন যে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে যথেষ্ট প্রমাণ নেই এবং তাকে "Not Guilty" রায় দেন।

খ) এই সিদ্ধান্ত অভিযুক্ত কিশোরের মৃত্যুদণ্ড রোধ করে এবং তাকে মুক্তি দেয়।

  1. ন্যায়বিচারের উদাহরণ:

ক)( রায়টি প্রমাণ করে যে যুক্তি এবং মানবিক বিচারপরায়ণতার মাধ্যমে পক্ষপাতদুষ্টতা এবং ভুল ধারণা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।


আইনি বিষয় ও শিক্ষা:

১. যুক্তির শক্তি:

ক) মুভিটি দেখায় যে একক ব্যক্তির যুক্তি ও সাহস কীভাবে একটি অন্যায় সিদ্ধান্ত রোধ করতে পারে।

খ) ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে প্রত্যেকেরই নিরপেক্ষভাবে চিন্তা করা প্রয়োজন।

২. জুরি সিস্টেমের ভূমিকা:

ক) মুভিটি জুরি সিস্টেমের ত্রুটিগুলোর প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে, যেখানে ব্যক্তিগত পক্ষপাত এবং আবেগ রায়কে প্রভাবিত করতে পারে।

খ) তবে এটি একই সঙ্গে দেখায় যে সঠিক প্রক্রিয়া এবং যুক্তির মাধ্যমে ন্যায়বিচার অর্জন সম্ভব।

৩. প্রমাণের বিশ্লেষণ:

ক)মুভিটি আইনজীবী ও জুরি সদস্যদের মনে করিয়ে দেয় যে প্রমাণের মূল্যায়ন সতর্কতার সঙ্গে করতে হবে।

খ) "Beyond a reasonable doubt" নীতি এখানে কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করে।

৪. পক্ষপাতদুষ্টতা এবং নৈতিক দায়িত্ব:

ক) মুভিটি পক্ষপাত ও সামাজিক সমস্যাগুলোর প্রতি আলোকপাত করে এবং দেখায় কীভাবে সেগুলো ন্যায়বিচারকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।

খ) জুরি সদস্যরা ধীরে ধীরে তাদের ব্যক্তিগত পক্ষপাত দূর করে কেবল সত্যের ভিত্তিতে রায় দেন।


"12 Angry Men" শুধুমাত্র একটি সিনেমা নয়; এটি বিচারব্যবস্থার মৌলিক বিষয়গুলিকে আরও নিবিড়ভাবে বোঝার একটি মাধ্যম। এটি আইন শিক্ষার্থীদের এবং বিচারপ্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জন্য শিক্ষা ও অনুপ্রেরণার একটি চমৎকার উৎস, যা আইনের জটিলতাকে একটি সহজবোধ্য ও সংবেদনশীল উপায়ে উপস্থাপন করে।

মুভিটির কোর্ট ড্রামা:

"12 Angry Men" বিচারব্যবস্থার মূল বিষয়গুলোতে অনুপ্রেরণা জাগায়। বিচারপ্রক্রিয়ায় পক্ষপাত, নৈতিক দায়িত্ব এবং যুক্তিসঙ্গত সন্দেহের মতো বিষয়গুলো কোর্ট ড্রামার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য বিষয় হয়ে উঠেছে। অনেকেই মুভিটিকে আইন শিক্ষার জন্য একটি অসাধারণ দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখেন এবং এটি কোর্টরুম ড্রামা ঘরানার মুভির ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হয়।

12 Angry Men সিনেমাটি তাই শুধু একটি কোর্ট ড্রামা নয়, এটি ন্যায়বিচারের মৌলিক প্রশ্নগুলিকে একটি ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে অন্বেষণ করে এবং দর্শকদের নৈতিক ও আইনি দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে ভাবতে উদ্বুদ্ধ করে।






Post a Comment

0 Comments