সর্বশেষ

6/recent/ticker-posts

সংক্ষিপ্ত বিচার(Summary trial)

সংক্ষিপ্ত বিচার(Summary trial)

 

সংক্ষিপ্ত বিচার(Summary trial)


গুরুতর নয় এমন অপরাধ এবং যে অপরাধমূলক কাজের জন্য লঘু শাস্তি হয়, সে সব অপরাধগুলো যে বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে করা হয় তাকে সংক্ষিপ্ত বিচার(Summary trial) বলা হয়। সংক্ষিপ্ত বিচার(Summary trial) ফৌজদারী কার্যবিধির ২৬০ ধারা হতে ২৬৫ ধারায় কি ধরনের অপরাধের সংক্ষিপ্ত বিচার হবে, কি পদ্ধতিতে এবং কোন ধরনের ম্যাজিস্ট্রেট বিচার করতে পারবেন সেই সম্পর্কে বিধান বর্ণিত হয়েছে। 


২৬০ ধারায় বলা হয়েছে যে, এই বিধিতে যা-ই থাকুক না কেন—


(ক) মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট,

(খ) সরকার কর্তৃক বিশেষভাবে ক্ষমতা প্রাপ্ত প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট এবং

(গ) সরকার কর্তৃক বিশেষভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত ও প্রথম শ্রেণীর ম্যাজস্ট্রেটের ক্ষমতাসম্পন্ন কোন ম্যাজিস্ট্রেটকেও নিম্নলিখিত অপরাধসমূহের অথবা যেকোন একটির বিচার সংক্ষিপ্ত পদ্ধতিতে করবেন—


(1) মৃত্যুদন্ড, দ্বীপান্তর বা দুই বৎসরের অধিক কারাদন্ডে দন্ডনীয় নয় এইরূপ অপরাধ;

(II) দন্ডবিধির ২৬৪ হতে ২৬৬ ধারা অনুসারে ওজন ও মাপ সম্পর্কিত অপরাধ;

(III) দন্ডবিধির ৩২৩ ধারা অনুসারে আঘাত;

(IV) দন্ডবিধির ৩৭৯, ৩৮০, ৩৮১ ধারা অনুসারে চুরি, যেক্ষেত্রে চোরাইমালের মূল্য ১০ হাজার টাকার অধিক নয়;

(V) দন্ডবিধির ৪০৩ ধারা অনুসারে অসৎভাবে সম্পত্তি আত্মসাৎ যেক্ষেত্রে আত্মসাৎকৃত সম্পত্তির মূল্য  ১০ হাজার টাকার অধিক নয়; 

(VI) উক্ত বিধির ৪১১ ধারা অনুসারে চোরাইমাল গ্রহণ করা বা রাখা যেক্ষেত্রে উক্ত মালের মূল্য ১০ হাজার টাকার অধিক নয়;

(VII) উক্ত বিধির ৪০৪ ধারা অনুসারে চোরাইমাল গোপন বা হস্তান্তর করতে সাহায্য করা, যেক্ষেত্রে উক্ত মালের মূল্য ১০ হাজার টাকার অধিক নয়;

VIII) উক্ত বিধির ৪২৬ ও ৪২৭ ধারা অনুসারে ক্ষতি সাধন;

(IX) উক্ত বিধির ৪৪৭ ধারা অনুসারে অপরাধমূলক অনধিকার প্রবেশ এবং ৪৫১, ৪৫৩ হতে ৪৫৭ ধারা অনুসারে অপরাধ;

(X) দন্ডবিধির ৫০৪ ধারা অনুসারে শান্তিভঙ্গের উস্কানী দেওয়ার উদ্দেশ্যে অপমান করা এবং ৫০৬ ধারা অনুসারে অপরাধজনক ভীতি প্রদর্শন এবং ৫০৯ ও ৫১০ ধারা অনুসারে অপরাধসমূহ;

XI) উপরোক্ত অপরাধসমূহের যে কোন একটির সহায়তা করা;

(XII) উপরোক্ত অপরাধসমূহের যে কোন একটি করিবার চেষ্টা, যখন এইরূপ চেষ্টা অপরাধ বলে গণ্য হয়;

(XIII) ১৮৭১ সালের গো-মহিষ পশুর অনধিকার প্রবেশ আইন(The Cattle-trespass Act, 1871) এর ২০ ধারা অনুসারে অপরাধ;


তবে শর্ত থাকে যে, মোকদ্দমার ক্ষেত্রে ম্যাজিস্ট্রেট ৩৪ (ক) ধারায় প্রদত্ত বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগ করেন। সেই সকল মোকদ্দমার বিচার সংক্ষিপ্ত হবে না।


ফৌজদারী কার্যবিধির ২৬১ ধারায় বলা হয়েছে যে, সরকার দ্বিতীয় বা তৃতীয় শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন ম্যাজিস্ট্রেট বেঞ্চকে নিম্নলিখিত অপরাধসমূহের সবগুলো বা যে কোন একটির বিচার সংক্ষিপ্ত পদ্ধতিতে করার ক্ষমতা দিতে পারেন।


(ক) দন্ডবিধির ২৭৭, ২৭৮, ২৭৯, ২৮৫, ২৮৬, ২৮৯, ২৯০, ২৯২, ২৯৩, ২৯৪, ৩২৩, ৩৩৪, ৩৩৬, ৩৪১, ৩৫২, ৪২৬, ৪৪৭ ও ৫০৭ ধারার অপরাধসমূহ;


(খ) পৌরসভা আইন ও পুলিশ আইনের কনজারভেন্সী ধারাসমূহের অপরাধ, যা কেবলমাত্র জরিমানাযোগ্য অথবা জরিমানাসহ বা ব্যতীত অনধিক ০১ মাসের কারাদন্ড;


(গ) উপরোক্ত অপরাধসমূহের যেকোন একটির সহায়তা করা; 

(ঘ) উপরোক্ত অপরাধসমূহের যে কোন একটি করার চেষ্টা করা; যখন এইরূপ চেষ্টা অপরাধ বলে গণ্য হয়।


ফৌজদারী কার্যবিধির ২৬২ ধারা অনুসারে, সংক্ষিপ্ত বিচারের ক্ষেত্রে দুই বৎসরের বেশী কারাদন্ডের আদেশ দেওয়া যাবে না।


Samuj Ali vs. The State (২৮ ডি. এল. আর) মামলার সিদ্ধান্তে বলা হয়েছে যে: 'সংক্ষিপ্ত বিচারের ক্ষেত্রে অভিযোগের সংক্ষিপ্ত সার আসামীর নিকট বিবৃত করা এবং ফৌজদারী কার্যবিধির ৩৪২ ধারায় আসামীকে Examine করা সংক্ষিপ্ত বিচারের ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক এবং উক্ত নিয়মে বিচার অনুষ্ঠিত না হলে সমগ্র বিচার বাতিল বলে গণ্য হবে।


Post a Comment

0 Comments