সর্বশেষ

6/recent/ticker-posts

ক্রোকি পরোয়ানা(Warrant of Attachment)কাকে বলে? সম্পত্তি ক্রোকের নিয়মাবলি আলোচনা করুন?




ক্রোকি পরোয়ানা(Warrant of Attachment)কাকে বলে? সম্পত্তি ক্রোকের নিয়মাবলি আলোচনা করুন? 


ক্রোকি পরোয়ানা(Warrant of Attachment)


কোন ব্যক্তির স্থাবর(immovable) এবং অস্থাবর(movable) সম্পত্তি আদালত বা উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক তাঁর নিজ হেফাজতে নেওয়ার নামই ক্রোক(Attachment)। ডিক্রি(Decree) জারীর বিভিন্ন পদ্ধতির মধ্যে ক্রোক একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি। কোন পলাতক বা ফেরারী আসামী আদালতে হাজির না হলে অথবা আত্মসমর্পণ না করলে হুলিয়া(Proclamation) প্রদানকারী আদালত যে কোন সময় পলাতক আসামীর স্থাবর(immovable) এবং অস্থাবর(movable) সম্পত্তি হেফাজতে বা ক্রোকের জন্য  স্বাক্ষর ও সীলমোহরযুক্ত যে আদেশ প্রদান করেন তাকে ক্রোকি পরোয়ানা(Attachment Warrant) বলা হয়। (ফৌজদারী কার্যবিধি ধারা-৮৮ ও পিআরবি ৪৭৪ বিধি)  ফৌজদারি কার্যবিধির ৮৮ হতে ৮৯ ধারায় পলাতক ব্যক্তির সম্পত্তি ক্রোক এবং ক্রোকি সম্পত্তি প্রত্যার্পণের বিধান বর্ণিত হয়েছে।


ফৌজদারী কার্যবিধির ১৪৬ ধারা অনুসারে ম্যাজিস্ট্রেট বিরোধীয় বিষয় ক্রোক করতে পারেন। আদালত কর্তৃক পক্ষবৃন্দের অধিকার বিষয়ে ঘোষণা না আসা পর্যন্ত কিংবা ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক শান্তি ভঙ্গের আশংকা দূর না হওয়া পর্যন্ত অত্র ধারার ক্রোক বহাল রাখা যায়।


২৯ ক্যাল, ৪১৭ মামলায় বলা হয়েছে ৮৭ ধারার আওতায় ক্রোকের ঘোষণা এবং ৮৮ ধারার আওতায় ক্রোকের আদেশ একই সময় হতে পারে ।

উল্লেখ্য,দেওয়ানী কার্যবিধির ২১ নম্বর আদেশের ৪১, ৪৪, ৪৬, ৪৯ ও ৫৩ নম্বর নিয়মগুলোতে ক্রোকের নিয়মাবলী বর্ণিত হয়েছে। ৩৮ নম্বর আদেশের ৫ নম্বর নিয়মে রায় ঘোষণার পূর্বে সম্পত্তি ক্রোক করা সম্পর্কে বিধানাবলী বর্ণিত হয়েছে। কোন কোন সম্পত্তি ক্রোকযোগ্য এবং কোন সম্পত্তি বা সম্পদ ক্রোকযোগ্য নয় তা দেওয়ানী কার্যবিধির ৬০ ধারায় বলা হয়েছে। এদিকে ১৯৯৩ সালের সরকারী পাওনা আদায় আইনের ১৭ ধারায় ক্রোক সম্পর্কে বিধান বর্ণিত হয়েছে।




সম্পত্তি ক্রোকের নিয়মাবলি:

১. ফৌজদারী কার্যবিধির ৮৮ (১) ধারা মোতাবেক কার্যবিধির ৮৭ ধারা অনুসারে ঘোষণা প্রদানকারী আদালত যে কোন সময় পলাতক ব্যক্তির স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি(immovable & movable Property) ক্রোকের আদেশ দিবেন।


২.ফৌজদারী কার্যবিধির ৮৮ (২) ধারা অনুসারে উপধারা (১) অনুযায়ী যে জেলায় ক্রোকের আদেশ দেওয়া হবে সে জেলার মধ্যে পলাতক ব্যক্তির যে কোন সম্পত্তি ক্রোক করা যাবে । অন্য কোন জেলায় পলায়নকৃত ব্যক্তির সম্পত্তি থাকলে সেখানকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বা জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমোদনক্রমে একই আদেশ দ্বারা নির্ধারিত সম্পত্তি ক্রোক করা যাবে। একই জেলার মধ্যে হবে :


৩.ফৌজদারী কার্যবিধির ৮৮ (৩) ধারা মোতাবেক পলাতক ব্যক্তির অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোকের আদেশ দেয়া হলে উক্ত সম্পত্তির-

  • জব্দ তালিকা প্রস্তুত করবে;
  • যথাযথ নিয়মে জব্দ করবে;
  • লিখিত আদেশ দ্বারা উক্ত সম্পত্তি হস্তান্তর নিষেধ করবে; 
  • আদালতের ইচ্ছা অনুসারে প্রয়োজনীয় আদেশ দ্বারা সম্পত্তি ক্রোক করা যায়।

৪. ফৌজদারী কার্যবিধির ৮৮ (৪) ধারা মোতাবেক পলাতক ব্যক্তির সম্পত্তি যদি স্থাবর হয় এবং স্থাবর সম্পত্তি যদি ক্রোকের আদেশ দেয়া হয় তবে  নিম্নবর্ণিত পন্থা অবলম্বন করতে হবে-

  • দখল গ্রহণ;
  • রিসিভার নিয়োগ;
  • লিখিত আদেশ দ্বারা উক্ত সম্পত্তি হস্তান্তর নিষেধ করবে; এবং
  • আদালতের ইচ্ছা অনুসারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

৫. ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ৮৮ (৫) এবং ৮৮ (৭) ধারা মতে যে সম্পত্তি ক্রোকের আদেশ দেয়া হয়েছে তা যদি গৃহপালিত পশু বা পচনশীল প্রকৃতির হয় তবে আদালত উক্ত সম্পত্তি বিক্রয়ের আদেশ দিতে পারবেন এবং বিক্রয়লব্দ অর্থ আদালতের আদেশ মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।


----------

Post a Comment

0 Comments